বানিয়াচংয়ে ৬১ বছর পর দুই ভাষাসৈনিককে সংবর্ধনা দিল প্রশাসন

বানিয়াচংয়ে ভাষা আন্দোলের ৬১ বছর পর প্রথমবারের মতো ভাষাসৈনিক দুই সহোদর অ্যাডভোকেট সদাকত আলী খান ও অ্যাডভোকেট শওকত আলী খানকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে স্থানীয় প্রশাসন। শুক্রবার শহীদ মিনার চত্ত্বরে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে তাদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম মুনীর উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান। শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্যে দেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) মশিউর রহমান, কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা সাফিয়া ফেরেদৌস, শিক্ষা কর্মকর্তা মিহির লাল আচার্য্য, পিআইও মেহেদি হাসান টিটু, যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা সারোয়ার সুলতান আহমদ, ভাষাসৈনিক সদাকত আলী খানের নাতনি কলেজ ছাত্রী ফাহমিদা খান উর্মি প্রমূখ। জানা গেছে, বানিয়াচংয়ে দশ জন ভাষাসৈনিকের মধ্যে সাত জন ভাষাসৈনিক বেঁচে নেই। যাত্রাপাশা এলাকার ভাষাসৈনিক আবদুল মুকিত খান বৃটেনে বসবাস করছেন। ২০০৯ সালে স্থানীয় উদীচী শিল্পী গোষ্ঠি ভাষাসৈনিক দুই সহোদরকে সংবর্ধিত করলেও স্থানীয় প্রশসন তাদেরকে মহান শহীদ দিবসের সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে স্মরন করেনি।
ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট সদাকত আলী খান বানিয়াচংয়ের প্রয়াত সহযোগি ভাষাসৈনিকদের কথা স্মরণ আবেগ-আপ্লুত হয়ে বলেন, খুবই আনন্দিত হতাম সবাই যদি এক সঙ্গে এই সংবর্ধনা পেতাম। সেদিন ঢাকায় গুলি চালিয়ে ছাত্রদের হত্যার পর সারা বাংলায় ছাত্রসমাজের মধ্যে আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই দাবানলে তদানিন্তন পাকিস্তান সরকার ভাষার দাবিতে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
অপর সংবর্ধিত ভাষাসৈনিক অ্যাডভোটেক শওকত আলী খান বলেন, আমরা জীবন বাজি ও জেল-জুলুম মাথায় পেতে নিয়ে মায়ের ভাষা অটুট রাখার জন্য আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। বক্তব্যে দেয়ার এক পর্যায়ে তিনি একুশের আন্দোলন ও তার সহযোগিদের কথা স্মরণ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় সভায় উপস্থিত অনেকই অশ্র“সিক্ত হয়ে পড়েন।